রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে লাগা আগুনে দুই সন্তানসহ পুড়ে মারা গেছেন পপি দাশ নামে এক নারী। তারা সবাই শান্তিনগরের বাসিন্দা। নিহত পপি দাশের মা বাসনার আহাজারি যেন থামছেই না। চিৎকার আর আর্তনাদ করে বলছেন, ‘বইমেলা থেইক্কা কাচ্চি খাইতে গেসিল আমার মা, আর আইলো না রে’।
পপির বোন ডলি দাশ সময় সংবাদকে বলেন, পপি প্রতি বছর তার বাচ্চাদের নিয়ে বইমেলায় যান। তার দুই সন্তান ১২ বছরের মেয়ে আর ৮ বছরের ছেলে। বৃহস্পতিবারও বইমেলা ঘুরে ‘কাচ্চি ভাইয়ে’ গিয়েছিলেন কাচ্চি খেতে। সেখান থেকে আর ফেরা হলো না তার এবং তার দুই সন্তানের। তারা সবাই এখন লাশ।
ডলি আরও বলেন,
ভেতর থেকে মাকে পপি কল দিয়ে বলছিলেন, ‘মা ভেতরে অনেক আগুন। আমি বের হতে পারছি না।’ মা ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বেইলি রোড আসলে চোখের সামনে ভবনটি আগুনে পুড়তে দেখেন।
এমন ভয়াবহ আগুন আগে দেখেননি নীলা
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পান তারা। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৯টা ৫৬ মিনিটে। পরে আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়লে আরও ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে পুলিশ, আনসার, র্যাব ও এনএসআই। ১৩টি ইউনিটের ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় অন্তত ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়েছে। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আরও ৪২ জনকে। মারা গেছেন ৪৪ জন। ঢামেক হাসপাতালে ৩০, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে একজন মারা গেছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ৩টি মরদেহ।
বেইলি রোডে আগুন: ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক গুরুতর আহত
ভবনটিতে পিৎজা ইন, স্ট্রিট ওভেন, খানাসসহ আরও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া ইলিয়েন, ক্লোজেস্ট ক্লাউডসহ জনপ্রিয় বিপণিবিতানও রয়েছে।