ছদ্মবেশ ধারণ করেও রক্ষা পেলেন না ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম। সম্প্রতি তিনি রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস থেকে গ্রেপ্তার হন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মোহাম্মদপুর থানায় দায়েকৃত তিনটি পৃথক হত্যা মামলার আসামি আতিকুল ইসলাম। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলায়ও তার নাম রয়েছে।
যখন সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ধরা পড়েন, তখন ছবিতে তাকে এক ভিন্ন চেহারায় দেখা যায়। সাধারণ চেহারার সঙ্গে মিলই ছিল না। কালো গোঁফ সাদা হয়ে গেছে, মুখভর্তি কাঁচা-পাকা দাড়ি, স্বাভাবিক রূপ থেকে যা একেবারেই আলাদা। তবে পোশাকে ছিল বিলাসিতার ছাপ— পরনে ছিল পাশ্চাত্যের দামি ব্র্যান্ড ভলকমের একটি টি-শার্ট। এরপরও তাকে বেশ উসকোখুসকো দেখা যায় ছবিতে।
এর আগে দাড়ি কেটে ছদ্মবেশ নিয়েও পালাতে গিয়ে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্তে আটক হন। অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টার দিকে তাকে আটক করে পুলিশ।
বেশভূষা বদলে ফেলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গ্রেপ্তার হন। তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সালমান এফ রহমানকে চুল-দাড়ি ছাঁটা অবস্থায় দেখা যায়। স্বাভাবিক চেহারায় তার মুখে লম্বা সাদা দাড়ি যেতো। অথচ গ্রেপ্তারের সময় দেখা যায়, মুখে একটিও দাঁড়ি নেই, ক্লিন শেভড। পরনে ছিল লুঙ্গি।
১৮ আগস্ট রাতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কার্যালয় থেকে সাবেক এ মেয়রের পালানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান তিনি। এর মধ্যে বিভিন্ন সময় তার গ্রেপ্তার ও দেশ ছাড়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
আতিকুল ইসলাম ২০১৯ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে প্রথমবারের মতো মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হন। গত ১৯ আগস্ট দেশের ১২ সিটিতে মেয়রদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। এ তালিকায় ছিলেন সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামও।
এর আগে ২০১৩-১৪ মেয়াদে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী হায়দারের আদালত আতিকুলের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাকে মোহাম্মদপুর থানার তিনটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।