Monday, December 23, 2024

এ পর্যন্ত সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন

আরও পড়ুন

শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একের পর এক মামলা হচ্ছে। সেসব মামলার আসামি হচ্ছেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীসহ প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপি ও তাদের সহযোগীরা। এসব মামলায় প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছেন। গতকাল সোমবার গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দুই ডজনেরও বেশি মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং শেখ হাসিনার সাবেক জ্বালানি, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ও সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রয়েছেন।

এছাড়া সাবেক দুই আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং এ কে এম শহীদুল হকসহ পুলিশের বেশ কয়েকে জন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ক্ষমতা হারানোর পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে, যেগুলোর বেশির ভাগই হত্যা মামলা। এছাড়া গণহত্যা এবং অপহরণের মতো অভিযোগেও মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে। এসব মামলার আসামির তালিকায় তার শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামও রয়েছে। একইভাবে নাম রয়েছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ অনেক নেতাদের।

আরও পড়ুনঃ  বিসিবির জরুরি সভায় থাকবেন পাপন, আসছে বড় সিদ্ধান্ত

গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরপরই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য। সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিনে তার কিছুক্ষণ পর গ্রেপ্তার হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দেয়। তাদেরকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে।

যদিও পরে আবার পলক, সৈকত ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুকে একই দিনে খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আরও পড়ুনঃ  বিদেশি নাগরিক সাহাবুদ্দিন কিভাবে দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রশ্ন রিপনের

তবে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সম্পর্কে এখনও কিছু জানায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বিমানবন্দর থেকে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এবং ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদকেও আটকের খবর আসে গণমাধ্যমে। তবে, তাদের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে কোনো তথ্য মেলেনি।

এদিকে, সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, গুম ইত্যাদির মামলা করা হচ্ছে। তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আবার অনেককে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এখন পর্যন্ত যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন— সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান।

আরও পড়ুনঃ  ৩ ব্যক্তি ও ৩ সংস্থার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার খড়গ

এছাড়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেননও গ্রেপ্তার হয়েছেন।

ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেমন গ্রেপ্তার হয়েছেন, তেমনি সাবেক অনেক কর্মকর্তাও আটক হয়েছেন।

এদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত সেনা কর্মকর্তা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান।

পাঁচই অগাস্ট সরকার পতনের পর তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সেইসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, যিনি এক সময় র‍্যাবে কর্মরত ছিলেন, তাকেও আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

তবে বাংলাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় নিহতের ঘটনাকে ঘিরে যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে, তার সমালোচনাও করছেন অনেকেই।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ