চলতি বছর গোটা শরৎকাল জুড়েই সারা দেশে মাঝারি থেকে প্রবল বৃষ্টির দেখা মিলেছে। ভিজেছে মাঠ-ঘাট-কাশবন। নদীতে থৈ থৈ পানি। তবে বিদায়ের পথে প্রিয় ঋতু শরৎ। আর প্রকৃতি থেকে শরৎ-এর বিদায়বেলায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে ইতোমধ্যে বিদায় নিয়েছে মৌসুমি বায়ু। তবে চট্টগ্রাম অঞ্চল এর ব্যতিক্রম।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা বাংলাদেশ থেকে পুরোপুরি বিদায় নিতে পারে।
এদিকে আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে এক পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানোর পাশাপাশি মৌসুমি বায়ুর বিদায়ের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির শঙ্কার কথাও জানানো হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হচ্ছে, যা পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এতে বৃষ্টিপাতও বাড়তে পারে।
ভারতীয় সংস্থাটি আরও জানায়, আগামী ১৪ অক্টোবর দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তীতে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে এবং শক্তি বাড়িয়ে লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হতে পারে। পরের দিন এটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। এরপর ১৭ অক্টোবর এটি উপকূলে উঠে আসতে পারে।
গত দু’মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা রীতিমত- ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।’
রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ রোববার সকাল পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এবং সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এ ছাড়া বর্ধিত পাঁচদিনে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।
রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে, ঢাকায় ২৮ মিলিমিটার। এই সময়ে নারায়ণগঞ্জে ২২ ও খুলনার কুমারখালীতে ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার (১২ অক্টোবর) দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পটুয়াখালীর খেপুপাড়া ও খুলনার মোংলায়, ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।