আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (নাসিম) ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফেনী-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হন। তবে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগপর্যন্ত ফেনীতে তাঁর পরিচয় ছিল ‘নিজাম হাজারীর অভিভাবক’।
ক্যাডার থেকে নিজাম হাজারীর গডফাদার হয়ে ওঠার মূল পৃষ্ঠপোষক ছিলেন শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা নাসিম। তিনি ফেনী গেলে নিজাম হাজারী পা ধরে সালাম করতেন। সভা-সমাবেশে নাসিমকে পরিচয় করিয়ে দিতেন ‘আমার অভিভাবক’ বলে। ফেনীতে ব্যানার–ফেস্টুনে লেখা হতো ‘ফেনীর অভিভাবক’। দলে বা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বা দায়িত্বে না থাকলেও জেলার সব জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছিলেন নাসিমের অনুগত।
নাসিমের এত প্রভাবের কারণ খুঁজতে ফেনীতে রাজনৈতিক নেতাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের ভাষ্য, আলাউদ্দিন নাসিমকে আগে সবাই শেখ হাসিনার ‘প্রটোকল অফিসার’ হিসেবেই চিনতেন। এর বাইরে তিনি শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আড়ালে-আবডালে ‘ফান্ড ম্যানেজার’ বলেও আলোচনা করতেন অনেকে।
ক্যাডার থেকে নিজাম হাজারীর গডফাদার হয়ে ওঠার মূল পৃষ্ঠপোষক ছিলেন শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা নাসিম। তিনি ফেনী গেলে নিজাম হাজারী পা ধরে সালাম করতেন। সভা-সমাবেশে নাসিমকে পরিচয় করিয়ে দিতেন ‘আমার অভিভাবক’ বলে।
কেবল ফেনীতে নয়, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর কোনো পদে না থেকেও জনপ্রশাসনে পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন নাসিম। পাশাপাশি প্রভাবশালী একজন আবাসন ব্যবসায়ীসহ বড় কয়েকটি ব্যবসায়িক গ্রুপের স্বার্থ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। নিজেও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিভিন্ন ব্যবসায় অংশীদার হন। পাশাপাশি সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, বাহাউদ্দিন নাছিম ও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে নিয়ে একটা ছোট স্বার্থান্বেষী গ্রুপও তৈরি করেন বলে ঢাকায় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।
তাঁদের ভাষ্য, আলাউদ্দিন নাসিমকে আগে সবাই শেখ হাসিনার ‘প্রটোকল অফিসার’ হিসেবেই চিনতেন। এর বাইরে তিনি শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আড়ালে-আবডালে ‘ফান্ড ম্যানেজার’ বলেও আলোচনা করতেন অনেকে।
উত্থান
নাসিম ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৬ সালে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নাসিম তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে গেলে তিনি বিরোধীদলীয় নেতার প্রটোকল কর্মকর্তা হন। পরবর্তী সময়ে তিনি সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন।
শেখ হাসিনার প্রটোকল কর্মকর্তা থাকাকালেই নাসিমের নানামুখী যোগাযোগ ও সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, ফেনীতে একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির নিয়ন্ত্রক ছিলেন গডফাদার খ্যাত জয়নাল হাজারী। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অভিযানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। দেশে ফেরেন ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর। কিন্তু এর আগেই ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে ফেনী আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই পুনর্গঠনের মূল কারিগর ছিলেন আলাউদ্দিন নাসিম।
দুদকে অভিযোগ
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ইতিমধ্যে অভিযোগ জমা পড়েছে। গত ১৫ বছরে তিনি অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ উপার্জন ও পাচার করেছেন বলে এই অভিযোগে বলা হয়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় নাসিম নিজের ও স্ত্রীর নামে ১০৮ কোটি টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৩ কোটি ৫৭ হাজার ২৯৫ টাকা এবং তাঁর স্ত্রীর ৬৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৫০ টাকা।
তবে স্থানীয় লোকজন মনে করেন, এই হিসাবের বাইরেও নাসিম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেশ-বিদেশে নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল অর্থসম্পদ রয়েছে। তাঁর মেয়ে কানাডায় থাকেন।
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ইতিমধ্যে অভিযোগ জমা পড়েছে। গত ১৫ বছরে তিনি অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ উপার্জন ও পাচার করেছেন বলে এই অভিযোগে বলা হয়।
যেভাবে ফেনীর রাজনীতির নিয়ন্ত্রক
ফেনীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নাসিম ‘অভিভাবক’ হয়ে উঠলেও জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর নাম আলোচিত ছিল না। ২০১২ সালে তাঁকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য করা হয়। যদিও পরে ওই সদস্যপদ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, ফেনীতে একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির নিয়ন্ত্রক ছিলেন গডফাদার খ্যাত জয়নাল হাজারী। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অভিযানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। দেশে ফেরেন ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর। কিন্তু এর আগেই ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে ফেনী আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই পুনর্গঠনের মূল কারিগর ছিলেন আলাউদ্দিন নাসিম। জয়নাল হাজারীকে ঠেকাতে এই পুনর্গঠনে সামনে রাখা হয় একসময়ের জয়নাল হাজারীর শিষ্য ও শক্তিশালী ক্যাডার নিজাম হাজারীকে। যদিও ওই নির্বাচনে ফেনী-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তবে ওই নির্বাচনে সারা দেশে আওয়ামী লীগের ভূমিধস বিজয় হলেও ফেনী জেলার তিনটি সংসদীয় আসনের কোথাও আওয়ামী লীগের কেউ নির্বাচিত হতে পারেননি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আলাউদ্দিন নাসিম জেলার রাজনীতিতে একচ্ছত্র প্রভাব তৈরি করতে নিজাম হাজারীকে দিয়ে পুরো জেলায় দলীয় ক্যাডারদের সংগঠিত করান। পাশাপাশি নিজাম হাজারীকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রশাসনকেও ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ আছে।
ফেনীর দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির গডফাদার ছিলেন জয়নাল হাজারী। তাঁর পতনের পর ফেনী জেলা আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন আলাউদ্দিন নাসিম। জয়নাল হাজারীর জায়গায় আসেন নিজাম হাজারী। তিনি নাসিমকে অভিভাবক বলে সম্বোধন করতেন।
নাসিম দলীয় সমর্থন দিয়ে ২০১১ সালে ফেনী পৌরসভার নির্বাচনে অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি নিজাম উদ্দিন হাজারীকে মেয়র নির্বাচিত করান। পরের বছর নিজাম হাজারীকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করার পেছনেও ছিলেন নাসিম। প্রশাসনিক খরচের কথা বলে ২০১৪ সালের বিনা ভোটের নির্বাচনে ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ফেনীর তিনটি আসনের প্রার্থীদের কাছ থেকে নাসিম বিপুল অর্থ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৯ সালের পর ফেনীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাসিমকে প্রধান অতিথি করা হতো। পোস্টার-ব্যানারে লেখা থাকত ‘ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের অভিভাবক আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম’। এসব অনুষ্ঠানের বক্তারাও আলাউদ্দিন নাসিমকে ‘অভিভাবক’ হিসেবে সম্বোধন করতেন।
জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, গত ১৫ বছরে নিজাম হাজারী অবৈধভাবে বিভিন্ন খাত থেকে যে বিপুল অর্থ কামিয়েছেন, সেটার একটা ভাগ আলাউদ্দিন নাসিমও পেতেন।
তবে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম মুঠোফোনে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, নিজাম হাজারীর উত্থানের পেছনে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই। ২০১২ সালের পর থেকে তিনি ফেনীর রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিশেষ পরিস্থিতিতে ফেনী-১ আসন থেকে প্রার্থী হন।
এলাকার নিয়ন্ত্রণে নাসিমের পরিবার
নাসিমের বাড়ি সীমান্তবর্তী উপজেলা পরশুরামের গুথুমা গ্রামে। বিলোনিয়া স্থলবন্দরটির অবস্থান পরশুরাম উপজেলায়। এই সীমান্ত দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা থেকে অবৈধভাবে শাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক আসে বাংলাদেশে। ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকও এই সীমান্ত দিয়ে দেশে আসছে। এই সীমান্তভিত্তিক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করেন নাসিমের ছোট ভাই জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ওরফে পাপ্পু এবং চাচাতো ভাই ও পরশুরাম পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ওরফে সাজেল। তাঁরা পরশুরাম এলাকার বালুমহালসহ অবৈধ উপার্জনের অন্যান্য খাতও নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে।
এই সাজেল তিনবার পৌর মেয়র হয়েছেন। সর্বশেষ দুবার হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তাঁর প্যানেলের সব কাউন্সিলরও নির্বাচিত হন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তখন গণমাধ্যমে এটা নির্বাচনের ‘ফেনী স্টাইল’ নামে পরিচিতি পায়। অভিযোগ আছে, এ ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রাখেন আলাউদ্দিন নাসিম।
পরশুরাম এলাকায় সাজেলের একটি বাহিনীও আছে। মূলত এ বাহিনীর সদস্যরা চোরাচালানসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ আছে। এই বাহিনীর হাতে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অনাদি রঞ্জন সাহা প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক মাস আগে এই বাহিনীর হাতে তিনি মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই নির্যাতন করা হতো।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আলাউদ্দিন নাসিম, তাঁর ভাই জালাল উদ্দিন আহমেদ ও চাচাতো ভাই সাজেলসহ তাঁদের সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে যান। তবে জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মুঠোফোনে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তিনি এবং তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য কোনো অন্যায় বা অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
লাল পতাকা টানিয়ে জমি দখল
ফেনীর পরশুরামের চিথলিয়ায় ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম কলেজ। অভিযোগ আছে, এই কলেজের জন্য ২০১৬ সালে স্থানীয়দের কাছ থেকে কিছু জমি জোর করে নামমাত্র মূল্যে লিখে নেওয়া হয়। পরে কলেজের আশপাশে প্রায় ৩০ একর জমি দখল করে নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, ভয় দেখিয়ে, জোর করে নামমাত্র মূল্যে কৃষিজমি নিয়ে নেওয়া হয়। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৮ জনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁদের সাতজনই ভয়ে নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তাঁরা বলেছেন, নাসিমের লোকজন লাল পতাকা টানিয়ে দিয়ে জমি দখল করেন। লাল পতাকা টানানোর পর বলা হতো, এই জমিগুলো অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। পরে দেখা যায়, অধিগ্রহণ নয়, দখল করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর পরিবারের দেড় বিঘা জমি জোর করে নিয়ে নেওয়া হয়। জমির মূল্য ১৫ লাখ টাকা হলেও পরিশোধ করা হয় ৫ লাখ টাকা।
মোসলেহ উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর পরিবারের প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমি দখল করেছেন আলাউদ্দিন নাসিম। তাঁর নিজের নামে ২০ শতাংশ জমি দানপত্র তৈরি করে লিখে নেন। এই জমির বাজারমূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু তাঁকে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩ লাখ টাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজের অবকাঠামোর বাইরে বিশাল জমিতে বড় বড় ছয়টি পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। বিশাল এলাকাজুড়ে বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপণ করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, এখানে বাগানবাড়ি তৈরির পরিকল্পনা ছিল আলাউদ্দিন নাসিমের।
তবে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম মুঠোফোনে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, নিজাম হাজারীর উত্থানের পেছনে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই। ২০১২ সালের পর থেকে তিনি ফেনীর রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিশেষ পরিস্থিতিতে ফেনী-১ আসন থেকে প্রার্থী হন।
জোর করে জমি নিয়ে কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নাসিম বলেন, ওই জমিগুলো ছিল অনাবাদি। কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয়রা স্বেচ্ছায় জমি দিয়েছেন। আর জমির দামও বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি এবং তাঁর পরিবারের কেউ কোনো ধরনের কমিশন-বাণিজ্যে যুক্ত ছিলেন না বলেও দাবি করেন।
ফেনীর রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের বিষয়ে নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে নাগরিক সমাজের অনেকে এখনো অস্বস্তি বা অনিরাপদ বোধ করেন। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ফেনী জেলা শাখার সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ফেনীর দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির গডফাদার ছিলেন জয়নাল হাজারী। তাঁর পতনের পর ফেনী জেলা আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন আলাউদ্দিন নাসিম। জয়নাল হাজারীর জায়গায় আসেন নিজাম হাজারী। তিনি নাসিমকে অভিভাবক বলে সম্বোধন করতেন।