বন্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় উত্তর কোরিয়ার ৩০ কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মূলত ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ায় এই ৩০ জনকে হত্যা করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার চোসুন টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় সম্প্রতি এক ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ১ হাজার মানুষ মারা যায়। উত্তর কোরিয়ার এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে চোসুন টিভি জানিয়েছে, এ ঘটনার পর এই ‘নজিরবিহীন ক্ষতির’ সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়ার নির্দেশ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। দুর্নীতি ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে ওই কর্মকর্তাদের গত মাসে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর কোরীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটি নিশ্চিত যে, বন্যাকবলিত এলাকার ২০ থেকে ৩০ জন সরকারি কর্মকর্তাকে গত মাসের আগস্ট মাসের শেষ দিকে একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।’ যেসব কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের নাম-পরিচয় এখনো প্রকাশ পায়নি।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সেন্ট্রাল কোরিয়ান নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, এ ছাড়া শাস্তি পাওয়াদের মধ্যে ২০১৯ সাল থেকে চাগাং প্রদেশের প্রাদেশিক পার্টি কমিটির সেক্রেটারি কাং বং-হুন একজন। প্রেসিডেন্ট কিম জং উন তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন।
গত জুলাই মাসে ব্যাপক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তর কোরিয়ায় ভূমিধস ও বন্যার সূত্রপাত হয়। ফলে ৪ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১৫ হাজার বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়। কিম জং উন নিজে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং বলেছেন যে বন্যায় সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত এলাকাগুলো পুনর্নির্মাণ ও পুনরুদ্ধার করতে কয়েক মাস সময় লাগবে। সরকার মা, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সৈন্যদের মতো দুর্বল গোষ্ঠীসহ ১৫ হাজার ৪০০ জনকে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই দিয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করলেও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানির খবর অস্বীকার করে দাবিগুলোকে ‘মিথ্যা গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি উত্তর কোরিয়ার আন্তর্জাতিক খ্যাতি নষ্ট করার জন্য পরিকল্পিত একটি ইচ্ছাকৃত ‘নোংরা প্রচারণা’—চালানোর অংশ হিসেবে এই গুজব ছড়ানোর জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন।