Tuesday, December 24, 2024

একাধিক পুরুষের সঙ্গে ভিডিও ভাইরাল, কে এই তরুণী?

আরও পড়ুন

বরগুনায় এক তরুণীকে ঘিরে রীতিমতো তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। যার নাম ইসরাত জাহান লামিয়া (২০)৷ আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের মো: বাহাদুর আকনের মেয়ে তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানিকঝুড়ি দাখিল মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন লামিয়া। ছোটবেলায় বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর সৎ মায়ের কাছে বেড়ে উঠেছেন। সেসময় থেকেই লাগামহীন জীবন যাপন করতেন তিনি।

যে কারণে মাধ্যমিকের গণ্ডি পাড় হওয়ার আগেই মাত্র ১৩ বছর বয়সে পার্শবর্তী গ্রাম টিয়াখালীতে বিয়ে হয় লামিয়ার। কিন্তু পাত্র পছন্দ না হওয়ায় প্রথম স্বামীর সঙ্গে সংসার ভাঙন দেখা দেয়।

এর মধ্যেই স্থানীয় এক আবাসিক হোটেল থেকে এই তরুণীকের দুই যুবকের সঙ্গে আটক করা হয়। এই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশির পর মামলা হয়। যে মামলায় ওই যুবক কারাগারে যান।

প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বরিশালে নিজের পছন্দে চাকরিজীবি ছেলেকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন লামিয়া। সেই স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীনই আবারও ভিডিওকাণ্ডে আলোচনায় এলেন এই তরুণী ।

আরও পড়ুনঃ  পুতুলের বাংলাদেশে আসা নিয়ে এবার যা জানা গেল

গত কয়েকদিনে দুই ইউপি চেয়ারম্যান ও এক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে লামিয়ার। এসব ভিডিও ভাইরালের আগে গত ১২ এপ্রিল রাতে ইসরাত জাহান লামিয়ার বিরুদ্ধে তালতলী থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু।

মামলার বিবরণে তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার প্রায় এক বছর আগে অভিযুক্ত নারী ইশরাত আমার মোবাইল ফোনের হোয়াটস অ্যাপে কল করে। প্রথমে আমি বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরবর্তীতে কল রিভিস করি এবং ওই নারী আমাকে বলে, ‘আমার এক পরিচিত মনে করে ভুলবশত ফোন চলে গেছে’। এ সময় নারী পরিচয় দেন তিনি বরিশালে থাকেন এবং ঢাকায় একটি এলএলবি অধ্যায়নরত।

তিনি বলেন, পরিচয়ের কয়েক দিন পর ঢাকায় কাজের জন্য গেলে ওই নারী (১নং আসামি) আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে আমরা একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করি। এরপর থেকে সে আমার হোয়াটসঅ্যাপে কল করতো এবং কুশলাদি বিনিময় হতো। যার ফলে আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর অনেক দিন পর অফিসিয়াল কাজ শেষে ঢাকা থেকে ফেরার পথে লঞ্চে আমার কেবিনের পাশে সেও কবিন ভাড়া নেয়। পথিমধ্যে রাতে এক সময় সে আমার কেবিনে প্রবেশ করে বলে ‘রাতের খাবার খাই নাই’। সরল বিশ্বাসে আমি খাবার অর্ডার এবং দুজনে একসঙ্গে বসে রাতের খাবার খাই। খাওয়া শেষে আমি তাকে কেবিনে যেতে বললে সে সুকৌশলে আমার কেবিনে শুয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে তার মোবাইলের মাধ্যমে গোপন ভিডিও ধারণ করে।

আরও পড়ুনঃ  যুবদল নেতাকে আটক করেছে সেনাবাহিনী

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, লামিয়ার ধারণ করা গোপন সেই ভিডিও গত বছরের ২৮ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুর রহমান তনুর হোয়াটসঅ্যাপ থেকে আমার মোবাইলে পাঠানো হয়। লামিয়া নিজেই সুকৌশলে ওই ভিডিও পাঠায়।

একই সময়ে সে পচাকোড়ালিয়া চেয়ারম্যান আ. রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর দুটি ভিডিও আমাকে পাঠানো হয়। পরে সে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে আমাকে বলে, ‘আমার বড় ভাই মনিরুজ্জামান মিন্টুর পক্ষে উপজেলা নির্বাচন না করলে তোমাদের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেব’। এ সময় লামিয়া আমার কাছে মোটা অংকের টাকাও দাবি করে।

আরও পড়ুনঃ  ঈশ্বরদীতে যুবলীগ কর্মীকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা

জেলার আমতলী ও তালতলীতে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইসরাত জাহান লামিয়া একজন পেশাদার ব্লাকমেইলার। জনপ্রতিনিধি, সমাজের গণ্যমান্য ও ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করতে তিনি। এরপর কৌশলে তাদেরকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গোপন ভিডিও ধারণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতই তার নেশা ও পেশা।

নাম পরিচয় গোপন রাখার স্বার্থে ভুক্তভোগী এক ব্যক্তির স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর সাথেও ফেসবুকে লামিয়ার পরিচয় হয়েছিল। শুরুতে লামিয়া নিজেকে অসহায় হিসেবে উপস্থাপন করে এবং কৌশলে আমার স্বামীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরবর্তীতে বিভিন্ন ছবি ও স্ক্রিনশট নিয়ে আমার স্বামীকে একের পর এক ব্লাকমেইল করতে থাকে এবং টাকা দাবি করে। এ সময় আমার স্বামী টাকা না দিয়ে লামিয়ার নামে মামলা করেন। ওই মামলায় অনেক দিন জেলে ছিলেন লামিয়া।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ