Tuesday, December 24, 2024

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে নিজ বাড়িতে এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন। ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণের নাম ইয়েন রোজারিও।

নিহত ওই তরুণ মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং গুলিতে নিহত হওয়ার আগে সাহায্যের জন্য ৯১১ নম্বরে ফোন করেছিলেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশে ইয়েন রোজারিওর বাড়ি গাজীপুরের পুবাইলে। তার বাবার নাম ফ্রান্সিস রোজারিও। বাবা-মা ও এক ভাইসহ তারা দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্কের ওজোন পার্ক এলাকায় বসবাস করে আসছেন। পুলিশের গুলিতে ইয়েন রোজারিওর নিহতের খবরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের পরিবেশ নেমে আসে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন বলছে, বুধবার দুপুরের দিকে জরুরি টেলিফোন নম্বর ৯১১ থেকে ফোন আসে পুলিশের কাছে। ফোনে জানানো হয়, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের ওই বাড়িতে যায়। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভেতরে ইয়েনকে দেখতে পায় পুলিশ। তাকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করলে ওই যুবক হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে পুলিশ সদস্যদের দিকে তেড়ে আসে। এ সময় পুলিশ গুলি চালায়।

আরও পড়ুনঃ  কোনো মেজরের বাঁশির ফু-তে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি : প্রধানমন্ত্রী

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী কেন ক্লার্ক বলেন, গুলির শব্দ শুনেছেন তিনি। তিনি পুলিশকে ওই বাড়িতে যেতে দেখেছেন, দরজায় টোকা দিতে দেখেছেন। শেষ পর্যন্ত তাদের ভেতরে যেতে দেখেছেন। তারপর তিনি চিৎকার শুনেছেন। পরে গুলির শব্দ সবাই শুনেছেন। তারপর কিছুটা নীরবতা এবং আবারও গুলির শব্দ শুনেছেন।

নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের চিফ অব প্যাট্রোল জন চেল জানিয়েছেন, ওই যুবক কাঁচি নিয়ে পুলিশের দিকে তেড়ে আসছিল। উদ্ধার অভিযানে পুলিশ তাদের ডিভাইসগুলো মোতায়েন করেছিল যা কাজও করছিল। কিন্তু যুবকের মা তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন এবং ইয়েনের হাতে থাকা কাঁচিতে আঘাত করে কাঁচি ফেলে দেন। এ সময় ওই যুবক আবার কাঁচি হাতে নেয় এবং পুলিশ সদস্যদের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার জন্য গুলি করা ছাড়া পুলিশের কোনো উপায় ছিল না। পরে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  বিএনপিকে প্রতিহত করতে হবে: ওবায়দুল কাদের

নিউইয়র্ক পুলিশ কর্মকর্তারা আরও জানান, অফিসাররা যখন ওই বাড়িতে পৌঁছে তখন কাঁচি হাতে থাকা ইয়েন রোজারিওর মুখোমুখি হয়েছিল পুলিশ। অফিসাররা তাকে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার এবং তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। কিন্তু সাহায্য নেওয়ার পরিবর্তে বাসার ড্রয়ার থেকে এক জোড়া কাঁচি বের করেন এবং পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। অফিসাররা প্রথমে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় রান্নাঘরে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় তার মা তাকে সাহায্যের জন্য চলে আসেন। পুলিশ কর্মকর্তারা তখন তাদের জানান যে, তিনি দুর্ঘটনাক্রমে তার শরীর থেকে পুলিশের মোতায়েন করা ডিভাইসগুলো ছিটকে ফেলে দিয়েছেন। এতে পুলিশ সদস্যদের অকার্যকর করে তুলেছেন তিনি। ওই যুবক তখন কাঁচি তুলে নিয়ে আবার অফিসারদের দিকে ছুটে আসলে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়।

আরও পড়ুনঃ  চাহিদার শেষ কোথায়? মোহাম্মদ শফিক আজিজ

জন চেল বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ অফিসারদের কেউ আহত হননি। তবে কানে আঘাত পাওয়ায় একজনকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ