গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ৩৫ জন নাবিকসহ বাংলাদেশি পতাকাবাহী এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণে নেয় সোমালি জলদস্যুরা। যখন জাহাজটি এ দুর্ঘটনায় পড়ে তখন সেটিতে ২৫ দিনের খাবার ও পানি মজুত ছিল। গত ১০ দিন সেই খাবার ও পানিতে ভাগ বসায় জলদস্যুরা। ফলে দ্রুত সেগুলো শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছিল নাবিকরা। এ খবরে তাদের স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। জাহাজ জিম্মির ৮ দিন পেরোনোর পর বুধবার (২০ মার্চ) জলদস্যুরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দূর হয় সেই উৎকণ্ঠা। কারণ, জিম্মি নাবিকদের খাবার ও পানির অভাব হবে না বলে জানিয়েছে দস্যুরা।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) এ খবর জানিয়েছে জাহাজের মালিকপক্ষের মুখপাত্র ও কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নাবিকদের সঙ্গে আমাদের আজও যোগাযোগ হয়েছে। জিম্মি থাকলেও তারা সবাই সুস্থ আছেন। এখন জাহাজে যে খাবার ও পানি আছে, তা বেশি দিন যাবে না। কিছুদিনের মধ্যে এটা ফুরিয়ে যাবে। তবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে জলদস্যুরা উপকূল থেকে এনে প্রয়োজন মেটাবে বলে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
মিজানুল ইসলাম বলেন, সোমালিয়া উপকূলে জিম্মি থাকা অনেক জাহাজকে এক বছরও অপেক্ষা করতে হয়। এটা নির্ভর করে অনেক কিছুর ওপর। তখনও কেউ খাবার ও পানির কষ্ট করে না। জলদস্যুরা নিজ দায়িত্বে এটার ব্যবস্থা করে। তারপরও আমরা বিকল্প পথে এগোচ্ছি। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে খাবার ও পানির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।
এদিকে জিম্মি জাহাজে খাবার ও পানি পাঠাতে কেনিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের সাহায্য চেয়েছে মালিকপক্ষ। সেই সঙ্গে কয়েকটি বীমা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে তারা। তবে জলদস্যুরা সরাসরি যোগাযোগ করায় বিষয়টি সহজ হয়েছে।
এর আগে গত ১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে ৩৫ জন নাবিকসহ বাংলাদেশি পতাকাবাহী এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণে নেয় সোমালি জলদস্যুরা।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের দিকে সব থেকে বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। দশ বছর চুপচাপ থাকার পর গত নভেম্বর মাস থেকে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে তারা। এ যাবত ২০টিরও বেশি আক্রমণ চালিয়েছে তারা। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি আক্রমণে সফলও হয়েছে তারা। তাদের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে শত শত মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে দস্যুরা।