Tuesday, December 24, 2024

‘দুর্ব্যবহারকারী’ সেই অতিরিক্ত সচিব জাফরিনকে বদলি

আরও পড়ুন

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরিনকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে বদলি করেছে সরকার। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার গুরুতর অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। এমন প্রেক্ষিতে তাকে রোববার (১০ মার্চ) বদলি করে আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

অভিযোগের আবেদনে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরিন এবং যুগ্মসচিব ইয়াসমিন বেগমের অবিরত দুর্ব্যবহারে কর্মচারীদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। এমন অভিযোগ নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কারণ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো এমন অভিযোগ করেছেন কর্মচারীরা।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের সই করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, দুই কর্মকর্তার কারণে সংশ্লিষ্টদের জন্য কর্মপরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠছে। গত এক বছরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা ও রিপোর্ট অনুবিভাগের বিভিন্ন শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে, যা একদিকে যেমন অগ্রহণযোগ্য তেমনি অপেশাদারত্বের চরম দৃষ্টান্ত। এ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সালমা জাফরীন এবং মন্ত্রিসভা/রিপোর্ট ও রেকর্ড অধিশাখার যুগ্মসচিব ইয়াসমিন বেগম তাদের অধীনস্তদের প্রতি রূঢ় আচরণ করে থাকেন। সামান্য ভুলেও কারও কারও জীবন দুর্বিষহ করছেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সঙ্গে নানা ধরনের অগ্রহণযোগ্য আচরণ করলেও বর্তমানে প্রতিমুহূর্তে তাদের এ আচরণ সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের এরূপ রূঢ় আচরণের ফলে আমরা আতঙ্কে দিন পার করছি। যা দিনে দিনে আমাদের মানসিকভাবে বিপর্যন্ত করে ফেলছে। তাদের এমন অসহিষ্ণু আচরণ, ব্যক্তি আক্রমণ যেমন অপেশাদারত্বের বহিঃপ্রকাশ তেমনি তাদের অযোগ্যতার লক্ষণও বটে।

আরও পড়ুনঃ  ‘গোলাগুলি করলেও তারা কারো গায়ে হাত তোলেনি’

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আমাদের ওপর বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া বিরূপ আচরণের নমুনা দেখে মনে হচ্ছে যেন আমাদেরকে ‘বস্তি’ কিংবা ‘রাস্তা’ থেকে উঠিয়ে এনে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তারা আমাদের ‘ছোটলোকের বংশধর’, ‘কেরানির বাচ্চা’, ‘ক্রিমিনাল’, ‘বেয়াদবের বাচ্চা’ এমন অপ্রত্যাশিত এবং অগ্রহণযোগ্য শব্দচয়ন যেন তাদের জন্য নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। এ ছাড়া অপ্রয়োজনে ইচ্ছাকৃতভাবে অফিস সময়ের পরে অফিসে আটকে রেখে হেনস্তা করার ঘটনা প্রাত্যহিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

তারা আরও বলেন, আমাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বিভিন্ন উপনামে যেমন ‘বেবি এলিফেন্ট’, ‘হাদা-বোদা’, ‘জমিদারের বাচ্চা’, ‘নবাবপুত্র’ ইত্যাদি ডাকা প্রতিদিনকার ঘটনা। সবসময় চাররিচ্যুত করার হুমকি দেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চাকরির অযোগ্য বলে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন। তাদের অগ্রহণযোগ্য আচরণ কর্মচারীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলছে।

আরও পড়ুনঃ  বেইলি রোড ট্র্যাজেডি: যেভাবে বাঁচলেন ও বাঁচালেন ৪০ জনের প্রাণ

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়-বিভাগ ও দপ্তর সংস্থার কাছে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। এ বিভাগের মেধাবী, সুশিক্ষিত, দক্ষ ও পরিচ্ছন্ন ইমেজের কর্মকর্তাদের পদায়ন হয়ে থাকে। কিন্তু সালমা জাফরিন ও ইয়াসমিন সেই সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ