ইরাকে নারীর বিয়ের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ৯ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে জাতীয় সংসদে। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতীয় সংসদে এই প্রস্তাব পাস হলে বয়স্ক ব্যক্তিরাও ৯ বছর বয়েসি মেয়ে-শিশুকে বিয়ে করতে পারবেন। শুধুমাত্র মেয়ের বাবার মত থাকতে হবে।
এই প্রস্তাবনা আইনে পরিণত হলে বয়স্ক যে কোনো ব্যক্তি ৯ বছরের মেয়ে-শিশুকে যেমন বিয়ে করতে পারবেন, তেমনি সন্তান নিজের হেফাজতে রাখা এবং স্বামীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা হারাবেন স্ত্রী।
দেশটির বিরোধী দল এ প্রস্তাবনার বিরোধিতা করেছে বলে খবরে জানা গেছে।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ-এর বরাত দিয়ে ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি সোমবার (১১ নভেম্বর) এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করে।
খবরে বলা হয়, ‘১৯৫৯ সনদ’ নামে পরিচিত ‘আইন ১৮৮’ সংশোধন করতে ইরাকের জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। এই আইন অনুসারে নারীর বিয়ের বয়স ১৮।
নতুন প্রস্তাবনা সংশোধিত আকারে আইনে পরিণত হলে বয়স্ক ব্যক্তিরা ৯ বছরের মেয়ে-শিশুকে বিয়ে করতে পারবেন। এক্ষেত্রে শুধু মেয়ের বাবার অনুমতি হলেই চলবে।
এই সনদ বা আইন সংশোধনের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘ধর্মীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী’ এবং ‘অনৈতিক সম্পর্ক থেকে নারীকে’ রক্ষায় সংসদে এ সংশোধন প্রস্তাবনা সংসদে আনা হয়েছে।
ইরাকে রাজতন্ত্রের পতনের পর ‘১৯৫৯ সনদ’ বা ‘আইন ১৮৮’ প্রবর্তন করা হয়, যা জাতিসংঘের সনদের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নারীর বিয়ের বয়স ১৮ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এটি ছিল ‘পারিবারিক আইন’ থেকে রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অধীনে পরিচালিত আইন।
এবিষয়ে চাথান হাউসের এক প্রকাশনায় ড. রেনাড মনসুর বলেন, এর মাধ্যমে শিয়া পক্ষের লোকজনই শুধু নয়, বাস্তবে সবাই এর সুবিধা ভোগ করবেন।
এদিকে, ইরাকের বিরোধী দলীয় নেতারা সরকারি দলের এ উদ্যোগের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, সংসদে এই আইন পাস হলে নারীর অধিকার খর্ব হবে।
অন্যদিকে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, প্রস্তাবনা সংসদে পাস হলে অল্প বয়েসি মেয়েরা যৌন হয়রানি ও শারীরিক সহিংসতার শিকারে পরিণত হবেন।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, ১৯৫০-এর দশক থেকেই নারীর বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগেই ইরাকে ২৮ শতাংশ নারী বাল্যবিয়ের শিকার। মূলত আইনের ফাঁক গলে ধর্মীয় নেতারা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।